প্রকাশিত: ০৬/০৮/২০১৮ ৯:২৯ এএম , আপডেট: ১৬/০৮/২০১৮ ১১:৪৪ পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট::
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনবাহিনীর রক্তক্ষয়ী দমন অভিযানের বার্ষিকী পালন করবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। বিশ্বব্যাপী সমালোচিত ওই দমন অভিযান শুরুর পর প্রায় আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ও বৃটেনের রাষ্ট্রদূত কারেন পিয়ার্স বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওই অনুষ্ঠানে মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস বক্তব্য দেবেন বলেও জানিয়েছেন।

মিয়ানমার বাহিনীর দমন অভিযানকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নির্মূল’হিসেবে অভিহিত করে আসছে।

পিয়ার্স বলেন, ‘২৮ আগস্ট জাতিসংঘের ওই অনুষ্ঠানে মিয়ানমারে জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর নিঃশর্ত প্রবেশের সুযোগ দানের দাবি তুলবে বৃটেন। তারা শরণার্থীদের নিরাপদ ও সম্মানজক প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে পারে এ দাবিও তোলা হবে নতুন করে।

তিনি বলেন, এটা অনেক বড় একটি ইস্যু। রোহিঙ্গারা ফিরে যাওয়ার সঙ্গে বসবাস ও জীবিকার বিষয়টিও জড়িত।

কারেন পিয়ার্স আরও দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অর্থাৎ যা ঘটেছে তার জন্য জবাবদিহিতা ও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয় নিয়েও কথা বলা হবে।

বৌদ্ধ সংখ্যাগুরু মিয়ানমারে বাসিন্দা রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক বৈষম্যের স্বীকার হয়ে আসছে গত চার দশক ধরে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও মৌলিক অধিকারও দেয়নি মিয়ানমার। ২০১৭ সালের বৃহদাকারে রোহিঙ্গা দমন শুরু করার আগে ২০১২-২০১৫ সালেও অন্তত দুই লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

এরপর গত বছর আগস্টে কয়েকটি সীমান্ত ফাঁড়িতে কথিত আরএসওর হামলার ধুয়ো তুলে রোহিঙ্গা নিধর শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর সঙ্গে যোগ দেয় রাখাইনের উগ্রপন্থি বৌদ্ধরা। তার পরপরই জঙ্গি দমনের নামে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়নের অভিযান শুরু করে মিয়ানমার বাহিনী।

অভিযানকালে মিয়ানমারের সেনারা ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে বলে অভিযোগ ওঠে। তাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ, নির্বিচারে হত্যা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়াসহ আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রমানসহ তুলে ধরে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর অত্যাচারকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে। এছাড়াও মিয়ানমার বাহিনীর বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করারও চেষ্টা চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কয়েকজন আইনজীবী।

পাঠকের মতামত